গড়ে তোলা হূৎপিণ্ডে স্পন্দনের অপেক্ষা
যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গড়া হূৎপিণ্ড রেখে কম্পনের (বিট) অপেক্ষায় দিন গুনছেন বিজ্ঞানীরা। শিগগিরই এসব হূৎপিণ্ড সচল হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। পরীক্ষাটি সফল হলে তা হবে মানবদেহের বাইরে নতুন করে গড়া কোনো হূৎপিণ্ডে কম্পন সৃষ্টির প্রথম ঘটনা। বিশ্বের কোটি কোটি হূদেরাগীর জন্য এটি হবে এক দারুণ সুখবর।
এই হূৎপিণ্ড তৈরির ক্ষেত্রে দান করা কয়েকটি হূৎপিণ্ড থেকে পেশিকোষ নিয়ে এর সঙ্গে রোগীর স্টেম সেলের সমন্বয় ঘটিয়েছেন গবেষকেরা। এরপর তাঁরা সবল হূৎকোষ তৈরির উপযোগী করে হূৎপিণ্ডগুলো রেখে দিয়েছেন বিশেষ স্থানে। এ ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকভাবে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে ক্রমে উন্নত পর্যায়ে গিয়ে আপনাআপনি হূৎপিণ্ডে স্পন্দন সৃষ্টি হয়।গবেষণার সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরিস টেলর বলেন, ‘এসব হূৎপিণ্ড পরিণত হচ্ছে। আমরা আশা করছি, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এগুলোর মধ্যে স্পন্দন দেখা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরনের একটি হূৎপিণ্ডকে পুরোপুরি কর্মক্ষম করার বেলায় অনেক বাধা রয়েছে। তবে আমি আশাবাদী, একদিন হূদেরাগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করার উপযোগী হূৎপিণ্ডের পুরোটাই বাইরে থেকে জন্মানো সম্ভব হবে।’
ডরিস টেলরের ভাষ্য, হূৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে রোগীকে সাধারণত এমন কিছু ওষুধ খেতে হবে, যা পরবর্তী জীবনে তাঁর রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এতে ওই রোগীর উচ্চরক্তচাপ ও বহুমূত্র রোগ দেখা দিতে পারে; দেখা দিতে পারে কিডনি অকেজো হওয়ার মতো জটিলতা। কিন্তু রোগীর স্টেম সেল ব্যবহার করে বাইরে থেকে কোনো হূৎপিণ্ড তৈরি করে তা রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করলে এসব রোগের ঝুঁকি অনেক কমে যেতে পারে।
প্রতিস্থাপনযোগ্য হূৎপিণ্ড গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গবেষকেরা প্রথমে দাতার হূৎপিণ্ড নিয়েছেন। এবার ওই হূৎপিণ্ড বিশেষ পদ্ধতিতে ধুয়ে কোষগুলো আলাদা করে মূল হূৎপিণ্ডকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যা স্রেফ একটি আমিষের খাঁচা। গবেষকেরা এর নাম দিয়েছেন ‘গোস্ট হার্ট’। এবার এই গোস্ট হার্টের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে হূদেরাগে ভোগা রোগীর স্টেম সেল। এভাবে এই হূৎপিণ্ডকে নতুন করে জন্মানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে টেলরের গবেষক দলটি ইঁদুর ও শূকরের হূৎপিণ্ড নিয়ে একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা চালিয়ে এতে স্পন্দন সঞ্চারে সফল হয়েছেন। ডেইলি মেইল অনলাইন।
No comments:
Post a Comment